GUNAKOR KATHI KHAIRIA AZIZIA KAMIL MADRASAH
ASHASHUNI,SATKHIRA. EIIN : 118581
সাম্প্রতিক খবর

সাতক্ষীরা জেলা সদরের শহরতলী গ্রামের কৃতী সন্তানেরা দেশ বরেণ্য হয়েছেন দেশকে আলোকিত করেছেন অথচ শহর সংলগ্ন এ মনোরম গ্রামটি অবহেলিত হয়ে আসছিল যুগযুগ ধরে। এ গ্রামের শিশু কিশোরদের অনেক পথ পায়ে হেঁটে স্কুল, কলেজে যেতে হতো এক সময়। শিক্ষা এবং কারিগরী দক্ষতায় পিছিয়ে পড়েছিল তাঁরা। অথচ এই গ্রামেই একদিন জন্ম গ্রহণ করেছিলেন বিশ্ব বরেণ্য শিশু বিশেষজ্ঞ ও জাতীয় অধ্যাপক ডাঃ এম আর খান। তাঁর সুযোগ্য সহধর্মিনী বেগম আনোয়ারা খানম বিষয়টি উপলব্ধি করে তাঁর স্বপ্ন পূরণের জন্য ডাঃ এম আর খানের সাথে মত বিনিময় করেন। ডাঃ এম আর খান বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে তাঁর রত্ন গর্ভা মাতা বেগম জায়রা খানম এর কাছ থেকে প্রয়োজনীয় জমি নিয়ে রসুলপুর গ্রামের কেন্দ্রস্থলে প্রতিষ্ঠা করেন রসুলপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়। পরবর্তীতে বিদ্যালয়ের প্রয়োজনে আরও ৬০ শতক পৈত্রিক জমি দান করেন ডাঃ এম আর খান। তাঁদের স্বপ্নের রসুলপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত শুধু সামনের দিকে এগিয়েছে। বিদ্যলয়ের শিক্ষার গুনগত মান উন্নয়ন,সহপাঠ্যক্রমিক কার্যক্রম, স্কাউট ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে অনেক স্কুলকে পিছে ফেলে আশাতীত সাফল্য অর্জন করে চলেছে। বিগত কয়েক বছর এস,এস,সি ও জে,এস,সি পরীক্ষায় গেল্ডন এ+ ও এ+ সহ শতভাগ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। ক্রিকেটে জেলা পর্যায়ে চ্যাম্পিয়নের গৌরব অর্জন করে বিভাগীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করে চলেছে। স্কাউট দল জেলা ,বিভাগ এবং জাতীয় ও সার্কভূক্ত দেশের জাম্বুরীতে অংশগ্রহণ করে কৃতিত্ব অর্জন করেছে। মহিলা সাতারু হিসাবে বিদ্যালয়ের মেয়েরা জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত কয়েকবার অংশ গ্রহণ করেছে। জাতীয় অধ্যাপক ডাঃ এম আর খান দম্পতি যে স্বপ্ন নিয়ে এ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তা পূর্ণ হয়ে চলেছে। কেননা এতদ্বঞ্চলের আলোকবর্তিকা হিসেবে এ বিদ্যালয় ইতোমধ্যে চিহ্নিত হয়েছে। রসুলপুর গ্রাম সংলগ্ন প্রায় ৮টি গ্রামের অবহেলিত,বঞ্চিত জনপদের দরিদ্র গ্রামবাসীর ছেলে মেয়েরা এখানে পড়াশুনা করে ভাল ফল নিয়ে নিজকে গড়ে তুলছে। বিদ্যালয়ের ছাত্র- ছাত্রীরা আজ জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে লেখা পড়া সহ বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা না হলে এই সব শিশু-কিশোরেরা শিক্ষার আলো থেকে হয়তো সম্পূর্ণ বঞ্চিত হত। শুধু বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেই ডাঃ দম্পতি ক্ষ্যান্ত হননি। এই হত দরিদ্র অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য ডাঃ এম আর খান ও আনোয়ারা খানম কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে নিয়মিত অর্থ প্রদান করে চলেছেন।

এই গর্বিত বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠায় যাঁদের অবদান আজকে স্মরণযোগ্য তাঁরা হলেন জমিদাতা জায়রা খানম,ডা:এম আর খান ,মিসেস আনোয়ারা খানম, শফি খান, সাংবাদিক আবদুল মোতালেব, রওশন আরা খানম, আরিফ খান , আজম খান, জেলা প্রশাসক, ম্যানেজিং কমিটি ও এই বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষক শিক্ষিকাবৃন্দ। এর মধ্যে যারা আমাদের ছেড়ে চিরতরে চলে গেছেন তাঁদের রুহের মাগফিরাত কামনা করি। আর যাঁরা বেঁচে আছেন তাঁদের দীর্ঘজীবন কামনা করি।

বর্তমান বিদ্যালয়টিতে ছয় শতর অধিক ছাত্র-ছাত্রী অধ্যায়ন করছে। শিক্ষক শিক্ষিকা ও কর্মচারী মিলে বিশ জন কর্মরত আছেন। বিজ্ঞান, মানবিক,ব্যবসায় শিক্ষা ও কম্পিউটার বিভাগ চালু রয়েছে। ১৯৮৮ ইং সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয়টি সরকার কর্তৃক জুনিয়র হিসাবে স্বীকৃতি পায় ১ জানুয়ারী ১৯৮৯। মাধ্যমিক হিসেবে স্বীকৃতি পায় ১ জানুয়ারী ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে।

বিদ্যালয়টিকে যে সকল গুণিজন পরিদর্শন করেছেন তাঁর মধ্যে শিক্ষামন্ত্রী জনাব শেখ শহিদুল ইসলাম, পররাষ্ট্র মন্ত্রী জনাব মোস্তাফিজুর রহমান, শিক্ষা সচিব জনাব খন্দকার শহিদুল ইসলাম, উপপরিচালক জনাব আবুল বাসার, জনাব মোঃ হেদায়েত আহম্মেদ পরিচালক ইউনেস্কো ব্যাংকক, জনাব এ এম খান চৌধুরী যুগ্ম সচিব শিক্ষা মন্ত্রণালয়, তথ্য সচিব জনাব নূরউদ্দীন আল মাসুদ, উপপরিচালক জনাব রাশিদা বেগম,সংসদ সদস্য জনাব কাজী শামছুর রহমান ও জনাব আব্দুল জব্বার, মিঃ এ্যন্ড মিসেস নিপ, ডাই লাইট ব্রক জার্মানি, কাজী ফারুক, প্রেসিডেন্ট প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র ঢাকা। চীপ ইঞ্জিনিয়ার এল জি ই ডি জনাব কামরুল ইসলাম সিদ্দকী প্রমূখ।

অল্পদিনের পথযাত্রায় এ প্রতিষ্ঠানটি অত্র এলাকায় সুনাম অর্জন করেছে। লেখাপড়ার পাশাপাশি সহপাঠ্যক্রমিক কার্যক্রমে সাফল্য লাভে সামর্থ হয়েছে। সকলের দোয়া ও সহযোগিতায় ভবিষ্যতকে আরো সুদৃঢ় করে তুলবে এ প্রত্যাশা আমাদের।